এইচএসসি ফল পুনর্নিরীক্ষণের নিয়ম ২০২৫ | বোর্ড চ্যালেঞ্জ করার পদ্ধতি ও তারিখ

এইচএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণ ২০২৫: আবেদন করার ৯টি আবশ্যক নিয়ম

0 5

এইচএসসি ফল পুনর্নিরীক্ষণ: এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর অনেক শিক্ষার্থীর মনেই অসন্তোষ বা সংশয় তৈরি হতে পারে। নিজের প্রত্যাশা অনুযায়ী নম্বর না পেলে মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক— “আমার খাতা কি সঠিকভাবে মূল্যায়ন হয়েছে?” এই চিন্তা থেকে জন্ম নেয় হতাশা এবং অনিশ্চয়তা। ফল পুনর্নিরীক্ষণ বা বোর্ড চ্যালেঞ্জের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন। আবেদনের সংক্ষিপ্ত সময়সীমা এবং ডিজিটাল প্রক্রিয়ার ছোট একটি ভুল আপনার পুরো প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে।

কিন্তু দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ফল পুনর্নিরীক্ষণের প্রক্রিয়াটি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং সহজবোধ্য। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করলেই আপনি আপনার উত্তরপত্র পুনঃযাচাইয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই লেখাটিতে আমরা সেই নিয়মগুলো ধাপে ধাপে আলোচনা করব, যাতে আপনি কোনো রকম ভুল ছাড়াই সফলভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন এবং আপনার প্রাপ্য ফলাফলের জন্য একটি সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।

সম্প্রতি, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের স্বাক্ষরসহ এক বিজ্ঞপ্তিতে এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর ফল পুনর্নিরীক্ষণের সময়সূচি ও নিয়মাবলি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আবেদন গ্রহণ করা হবে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

যে ৯টি নিয়ম অবশ্যই মানত

আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক এবং সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিচের নিয়মগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করতে হবে:

১. ওয়েবসাইটে প্রবেশ: প্রথমেই আপনাকে শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং আপনার বোর্ডের নাম নির্বাচন করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।

২. মোবাইল নম্বর প্রদান: পরবর্তী ধাপে আপনার একটি ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দিতে হবে। পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হলে এই নম্বরেই এসএমএস-এর মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

৩. বিষয় নির্বাচন: এরপর স্ক্রিনে আপনার বিষয়ভিত্তিক ফলাফল প্রদর্শিত হবে। আপনি যে এক বা একাধিক বিষয়ের ফল পুনর্নিরীক্ষণ করতে চান, সেই বিষয়গুলো নির্বাচন করে ‘ফি প্রদান করুন’ বাটনে ক্লিক করতে হবে।

৪. আবেদন ফি: প্রতিটি পত্রের জন্য ১৫০ টাকা হারে ফি প্রযোজ্য হবে। যেসব বিষয়ের দুটি পত্র রয়েছে (যেমন: বাংলা ১ম ও ২য় পত্র), সেসব ক্ষেত্রে উভয় পত্রের জন্যই আবেদন করতে হবে, অর্থাৎ ফি হবে ৩০০ টাকা।

৫. ফি পরিশোধের পদ্ধতি: পরবর্তী স্ক্রিনে আপনার প্রদেয় সর্বমোট ফি-এর পরিমাণ দেখানো হবে। আপনি বিকাশ, নগদ, সোনালি সেবা, ডিবিবিএল রকেট বা টেলিটক সিমের মাধ্যমে সহজেই ফি পরিশোধ করতে পারবেন। পেমেন্ট করার বিস্তারিত পদ্ধতি ওয়েবসাইটের ‘হেল্প’ বাটনে ক্লিক করে জেনে নেওয়া যাবে।

৬. আবেদন জমা দিন: সফলভাবে ফি পরিশোধ করার পর আপনাকে আবার আবেদনের পোর্টালে ফিরে এসে ‘জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করে আবেদন চূড়ান্ত করতে হবে।

৭. একাধিকবার আবেদনের সুযোগ: একবার আবেদন জমা দেওয়ার পরও যদি আপনি নতুন কোনো বিষয় যোগ করতে চান, তবে একই প্রক্রিয়ায় পুনরায় আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নতুন করে মোবাইল নম্বর দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

৮. আবেদন পরিবর্তন ও চূড়ান্তকরণ: মনে রাখবেন, ফি পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত আপনি ‘মুছে ফেলুন’ বাটনে ক্লিক করে নির্বাচিত বিষয় পরিবর্তন বা বাতিল করতে পারবেন। কিন্তু একবার ফি জমা দেওয়া হয়ে গেলে সেই আবেদন আর কোনোভাবেই বাতিল করা যাবে না এবং পরিশোধকৃত ফি ফেরতযোগ্য নয়।

৯. ম্যানুয়াল আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়: এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য সরাসরি বা হাতে হাতে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।

এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য শিক্ষার্থীরা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (www.dhakaeducationboard.gov.bd) ভিজিট করতে পারেন। সঠিক নিয়ম মেনে সময়মতো আবেদন করে আপনি আপনার ফলাফলের অনিশ্চয়তা দূর করার পথে এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারেন।

আরও পড়ুনএইচএসসি রেজাল্ট ২০২৫ দেখার নিয়ম | মার্কশিটসহ ফলাফল, বোর্ড চ্যালেঞ্জ এবং এসএমএস পদ্ধতি

Leave A Reply

Your email address will not be published.