নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬: সরকারি কর্মীদের জন্য চূড়ান্ত গাইড, নতুন গ্রেড কাঠামো ও ভাতা বৃদ্ধির বিস্তারিত

9th National Pay Scale Bangladesh 2026: The Ultimate Guide to New Pay Commission, Grade Changes & Salary Hike

1 115

নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬: নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬ কবে কার্যকর হবে? জানুন বেতন কমিশন ২০২৫-এর সময়রেখা, গ্রেড সংখ্যা কমানোর আলোচনা, এবং নতুন চিকিৎসা/শিক্ষা ভাতা বৃদ্ধির বিস্তারিত আপডেট। সরকারি কর্মীদের জন্য চূড়ান্ত গাইড।

নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬ কার্যকর করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ গঠিত হয়েছে এবং দ্রুততার সাথে কাজ করছে। এই পিলার পেজ-এ আপনি নতুন বেতন কাঠামো গেজেট আকারে বাস্তবায়নের সম্ভাব্য তারিখ, গ্রেড সংখ্যা কমানো এবং বেতন ও ভাতার (চিকিৎসা, শিক্ষা) প্রত্যাশিত পরিবর্তন সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাবেন। বিগত পে-স্কেলগুলোর বিলম্ব এবং কাঠামোগত দুর্বলতা কাটিয়ে, এই কমিশন একটি ন্যায়সংগত, স্বচ্ছ এবং দ্রুত কার্যকরযোগ্য বেতন কাঠামো প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সরকারি কর্মচারী, চাকরিপ্রার্থী এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের জন্য এটি একটি অপরিহার্য মাস্টার গাইড।

কেন নবম পে-স্কেল এত দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে?

ঐতিহাসিকভাবে, নতুন জাতীয় বেতন কমিশন গঠন ও পে-স্কেল বাস্তবায়নে বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যায়। তবে নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬-এর ক্ষেত্রে গতি কিছুটা ভিন্ন। এর পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক যুক্তি এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত।

নবম বেতন কমিশন, ২০২৫: গঠন ও উদ্দেশ্য

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম দিকেই জাতীয় বেতন কমিশন, ২০২৫ গঠন করা হয়েছে। কমিশনের মূল উদ্দেশ্য কেবল মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বৃদ্ধি করা নয়, বরং ২০-গ্রেডবিশিষ্ট পুরোনো কাঠামোতে থাকা গ্রেড বৈষম্য দূর করা, সর্বোচ্চ-সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাতকে যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কর্মচারীদের ভাতা বৃদ্ধি করে জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। কমিশনের গঠন ও দ্রুত কার্যক্রম ইঙ্গিত দেয়, তারা কোনোভাবেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সময়ক্ষেপণ করতে চান না।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ঘোষণা: কার্যকর হওয়ার সম্ভাব্য সময়রেখা (জানুয়ারি/মার্চ ২০২৬)

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ-এর মতো অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা এই প্রক্রিয়ার গুরুত্ব নিয়ে বারবার বক্তব্য রেখেছেন। তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দেশের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ২০২৬ সালের জানুয়ারি বা মার্চ মাসের মধ্যেই নতুন বেতন স্কেল গেজেট আকারে কার্যকর করা প্রয়োজন।

“অর্থ উপদেষ্টার বিশ্লেষণ: কেন পরবর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই গেজেট প্রকাশ করছে?”
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ-এর বক্তব্যকে মূল ভিত্তি করে এটি বলা যায়, পে-স্কেল কার্যকর করার সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণরূপে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সাথে যুক্ত। মূল্যস্ফীতি সরকারি কর্মীদের ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তা নিরসনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষা করলে আর্থিক চাপ আরও বাড়বে এবং বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা আসবে। তাই, অর্থনৈতিক জরুরি বিবেচনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই গেজেট প্রকাশ করে ভিত্তি স্থাপন করতে পারে, যাতে কর্মচারীরা দ্রুত স্বস্তি পান।

গেজেট আকারে প্রকাশের নিশ্চয়তা: পরবর্তী সরকারের জন্য অপেক্ষা নয়

কমিশনের দ্রুত কাজ করার আরেকটি বড় কারণ হলো, তারা পুরো প্রক্রিয়াটিকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বেঁধে দিয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে তারা ৬ মাসের মধ্যে সুপারিশমালা জমা দেবেন। এই পদক্ষেপ নিশ্চিত করে যে এই গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক সিদ্ধান্তটি কোনোভাবেই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের অপেক্ষায় থাকবে না, যা নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দ্রুততাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

নবম বেতন স্কেল ২০২৬: কাঠামোগত পরিবর্তন ও গ্রেড হ্রাস

The Proposed Pay Structure: নবম পে-স্কেলের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলো বিদ্যমান গ্রেড কাঠামোতে পরিবর্তন আনা। ২০-গ্রেডের কাঠামোকে যৌক্তিক ও সহজ করতে কমিশন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করছে।

বিদ্যমান ২০ গ্রেড থেকে ১৫ বা ১২ গ্রেডে আসার আলোচনা

Impact of Grade Reduction: বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ২০টি গ্রেড রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই গ্রেড সংখ্যাকে পদোন্নতি ও বৈষম্য সৃষ্টির একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কমিশন বর্তমানে ১৫টি বা এমনকি ১২টি গ্রেডে নামিয়ে আনার বিষয়ে জোর আলোচনা করছে।

কাঠামো বর্তমান (৮ম পে-স্কেল) প্রস্তাবিত (৯ম পে-স্কেল আলোচনা)
গ্রেড সংখ্যা ২০টি (সর্বোচ্চ ১, সর্বনিম্ন ২০) ১২টি বা ১৫টি
প্রভাব পদোন্নতিতে দীর্ঘসূত্রতা, স্তরীয় বৈষম্য কাঠামোগত সরলীকরণ, দ্রুত পদোন্নতি, বৈষম্য হ্রাস

গ্রেড সংখ্যা কমানোর মূল উদ্দেশ্য হলো মধ্যম স্তরে আটকে থাকা কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানো এবং পুরো কাঠামোকে আরও গতিশীল করা।

সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত: ১০:১ বজায় রাখার কারণ

অষ্টম পে-স্কেলে (২০১৫) সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ছিল ৮:১। নবম পে-স্কেলে এই অনুপাতকে ১০:১ বা তার কাছাকাছি বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫, সকল স্টেকহোল্ডারদের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে তারা একটি উন্মুক্ত প্রশ্নমালা প্রকাশ করেছে।

  • জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ এর উন্মুক্ত প্রশ্নমালার ৪টি প্রশ্ন:
  1. বর্তমান ২০-গ্রেড কাঠামোর পরিবর্তে গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে কতটি করা যৌক্তিক?
  2. বেতন ও ভাতা কী হারে বাড়ানো উচিত, বিশেষত মূল্যস্ফীতির সাপেক্ষে?
  3. চিকিৎসা ও শিক্ষা ভাতা কীভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় অনুসারে পুনর্বিন্যস্ত করা যায়?
  4. স্বায়ত্তশাসিত বা সামরিক বাহিনীর মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বেতন কাঠামোতে কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন?

কমিশন একটি নির্দিষ্ট তারিখ পর্যন্ত এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারী, বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।

আর্থিক প্রভাব: বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির চূড়ান্ত বিশ্লেষণ

Salary & Allowance Hike নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের সবচেয়ে সরাসরি প্রভাব পড়বে সরকারি কর্মচারীদের পকেটে। মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে বেতন ও ভাতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ: ১,৫০০ টাকা থেকে কত হতে পারে?

বর্তমান চিকিৎসা ভাতা নামমাত্র পর্যায়ে রয়েছে (সাধারণত ১,৫০০ টাকা)। ক্রমবর্ধমান চিকিৎসা ব্যয় বিবেচনা করে, এই ভাতাটি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোর জোর সুপারিশ করা হয়েছে।

  • প্রস্তাবিত বৃদ্ধি: কমিশন ২০২৫-এর সদস্যরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে চিকিৎসা ভাতাটি বর্তমানের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ বাড়ানো হতে পারে, অর্থাৎ এটি ৪,৫০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকা বা তারও বেশি হতে পারে। এর উদ্দেশ্য হলো, সরকারি কর্মচারীরা যেন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত হন এবং মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পান।

অবসরোত্তর সময়ের জন্য অতিরিক্ত চিকিৎসা সুবিধার পরিকল্পনা

নবম পে-স্কেলে একটি নতুন দিক যোগ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যা হলো অবসরোত্তর চিকিৎসা সুবিধা। একজন সরকারি কর্মচারী অবসর গ্রহণের পরেও যাতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত একটি বিশেষ চিকিৎসা তহবিল বা ইন্স্যুরেন্সের আওতায় থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা চলছে। এটি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের জন্য একটি বড় স্বস্তি হতে পারে।

সন্তানদের শিক্ষা ভাতা বৃদ্ধি: নতুন মানদণ্ড কেমন হবে?

বর্তমানে শিক্ষা ভাতা খুব কম। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সন্তানদের শিক্ষা ভাতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো অপরিহার্য। প্রস্তাবনা রয়েছে যে, এই ভাতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরণ এবং শহরের জীবনযাত্রার ব্যয়-কে নতুন মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

মোট বেতন বৃদ্ধি: গড়ে কী হারে বাড়ানো হতে পারে?

পূর্ববর্তী পে-স্কেলগুলোর (যেমন, ৮ম পে-স্কেল) অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, সাধারণত শতকরা ৫০% থেকে ১০০% পর্যন্ত মূল বেতন বৃদ্ধি পেয়েছিল। নবম পে-স্কেল ২০২৬-এ, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে, মূল বেতন গড়ে শতকরা ৫০% থেকে ৬৫% পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। এটি চূড়ান্তভাবে নির্ভর করবে কমিশনের সুপারিশ এবং সরকারের আর্থিক সামর্থ্যের ওপর।

নবম পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারী ও জনগণের প্রত্যাশা

এই বেতন স্কেল কেবল আর্থিক বৃদ্ধি নয়, এটি সরকারি প্রশাসনে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ন্যায়সংগত বেতন কাঠামো: গ্রেড বৈষম্য দূরীকরণের চ্যালেঞ্জ

কর্মচারীদের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা হলো, নতুন বেতন স্কেল যেন গ্রেড বৈষম্য দূর করতে পারে। একই যোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন গ্রেডে কর্মরতদের মধ্যে যে ব্যবধান তৈরি হয়, তা কমাতে গ্রেড কমানো এবং বিশেষ করে সচিবালয়ের বাইরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানো এই স্কেলের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।

মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে নতুন বেতনের সামঞ্জস্য 

সরকারি কর্মীদের মূল দাবি হলো, বেতন বৃদ্ধি যেন দেশের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির হার এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের (বিশেষত খাদ্য ও বাড়িভাড়া) সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। যদি কেবল নামমাত্র বৃদ্ধি হয়, তবে তা কর্মচারীদের জীবনে কোনো বাস্তব পরিবর্তন আনবে না। এই কারণেই কমিশন মূল্যস্ফীতি সমন্বয় (Inflation Adjustment) ফ্যাক্টরটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।

“৮ম পে-স্কেল (২০১৫) বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা: ২০১৮ সালে কার্যকর হওয়ার আগে আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব কেমন ছিল? সেই অভিজ্ঞতা থেকে ২০২৬ সালের দ্রুত বাস্তবায়নে কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে।”
“যখন ৮ম পে-স্কেলের গেজেট কার্যকরের অপেক্ষায়, তখন প্রায় দুই বছরের বেশি সময় লেগেছিল। আমলাতান্ত্রিক বিলম্বের ফলে বকেয়া বেতন হাতে আসতেও বেশ সময় লেগেছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলে, ২০২৬ সালের দ্রুত বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং বকেয়া (Retroactive) পরিশোধের প্রক্রিয়াটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কমিশনকে অবশ্যই গেজেট প্রকাশের সাথে সাথেই আর্থিক প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার রোডম্যাপ দিতে হবে।” – আব্দুল মালেক (সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, অর্থ মন্ত্রণালয়)

অষ্টম পে-স্কেলের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা: মসৃণ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ

অষ্টম পে-স্কেলে কয়েকটি দুর্বলতা ছিল: যেমন, গ্রেড বৈষম্য বাড়া এবং কার্যকর হওয়ার পূর্বে দীর্ঘসূত্রতা। নবম কমিশন এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি মসৃণ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ তৈরি করছে, যেখানে:

১. নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুপারিশমালা জমা।

২. অর্থ মন্ত্রণালয়ের দ্রুত সম্মতি আদায়।

৩. গেজেট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বকেয়া (Retroactive) নিষ্পত্তির পথ তৈরি রাখা।

নবম জাতীয় পে-স্কেল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ধাপসমূহ (Next Steps)

কমিশনের কাজ শেষ হলেও গেজেট প্রকাশ ও অর্থ বরাদ্দের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করতে হবে।

কমিশনের সুপারিশ জমা দেওয়ার সময়সীমা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

কমিশন ২০২৫-এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো, গঠিত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে সুপারিশমালা সরকারের কাছে জমা দেওয়া। এই সুপারিশমালাতে গ্রেড কমানো, বেতন বৃদ্ধির হার, এবং ভাতার পরিমাণ নিয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সেই সুপারিশমালা পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গেজেট প্রকাশের প্রক্রিয়া ও অর্থ বরাদ্দ (সংশোধিত বাজেট প্রসঙ্গ)

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হওয়ার পর, অর্থ মন্ত্রণালয় নবম জাতীয় বেতন স্কেলের গেজেট প্রকাশ করবে। গেজেট প্রকাশের অর্থ হলো, নতুন বেতন কাঠামো সরকারিভাবে কার্যকর হলো। এই অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করার জন্য সরকারকে সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন করতে হতে পারে, যা দ্রুত অর্থ সংস্থানের নিশ্চয়তা দেবে।

Retroactive Effect (বকেয়া): পে-স্কেল কার্যকরের বিষয়ে সম্ভাব্য আলোচনা

ঐতিহ্যগতভাবে, জাতীয় পে-স্কেলগুলো Retroactive Effect (বকেয়া সুবিধা) সহ কার্যকর হয়। অর্থাৎ, গেজেট প্রকাশের তারিখ যা-ই হোক না কেন, বেতন স্কেলের সুবিধা একটি নির্দিষ্ট পূর্ববর্তী তারিখ থেকে গণনা করা হয়।

  • সম্ভাব্য পরিস্থিতি: যদিও কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ২০২৬ সালের শুরুতেই এটি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যদি কোনো বিলম্ব হয়, তবে ১লা জুলাই ২০২৫ বা ১লা জানুয়ারি ২০২৬ থেকে বকেয়া বেতন প্রদানের জন্য আলোচনা হতে পারে। এটি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ on 9th National Pay Scale)

নতুন পে-স্কেল কবে থেকে কার্যকর হবে?

  • বর্তমানে কমিশনের লক্ষ্য হলো, তাদের সুপারিশমালা দ্রুত জমা দেওয়া এবং সরকারের মাধ্যমে জানুয়ারি ২০২৬ বা মার্চ ২০২৬-এর মধ্যেই গেজেট আকারে কার্যকর করা।

নবম পে-স্কেল কি কেবল মূল বেতন বাড়াবে?

  • না। নবম পে-স্কেল কেবল মূল বেতন নয়, একইসাথে চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা ভাতা, বাড়ি ভাড়া এবং অন্যান্য সকল ভাতাও মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পুনর্বিন্যস্ত করবে।

সামরিক বাহিনী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য কী পরিবর্তন আসছে?

  • জাতীয় বেতন কমিশন সাধারণত বেসামরিক কর্মচারীদের পাশাপাশি সামরিক বাহিনী এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সমন্বিত বেতন কাঠামো সুপারিশ করে। তাদের জন্যও গ্রেড সরলীকরণ এবং ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকবে।

কমিশন কেন মতামত জানতে চাইছে?

  • কমিশন তার সুপারিশমালায় গ্রহণযোগ্যতা এবং ন্যায়সংগততা নিশ্চিত করতে চায়। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের (কর্মচারী, বিশেষজ্ঞ, জনগণ) মতামত নিলে, তারা একটি অধিকতর বাস্তবসম্মত ও সর্বজনীনভাবে গৃহীত কাঠামো তৈরি করতে পারবে।

9th National Pay Scale 2026

নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬-এর মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের জীবনে একটি বড় আর্থিক এবং কাঠামোগত পরিবর্তন আসতে চলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ এবং জাতীয় বেতন কমিশন ২০২৫-এর সময়াবদ্ধ কার্যক্রম স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে, এবার দীর্ঘসূত্রতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। গ্রেড কমানো, চিকিৎসা ও শিক্ষা ভাতার যৌক্তিক বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির সমন্বয়—এই স্কেলের প্রধান আকর্ষণ। সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ জনগণকে অবশ্যই কমিশনের সুপারিশের ওপর নজর রাখতে হবে, কারণ এই পে-স্কেল কেবল সরকারি চাকরিজীবীদের নয়, বরং সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর একটি বিশাল প্রভাব ফেলতে চলেছে। চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা এর পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ নিয়ে আসব।

আরও পড়ুনক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৬: সিলেবাস, মান বণ্টন ও প্রস্তুতি কৌশল

Source কালের কণ্ঠ
1 Comment
  1. […] আরও পড়ুন: নবম জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৬: সরকারি কর্… […]

Leave A Reply

Your email address will not be published.