ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: সাত কলেজের ভবিষ্যৎ বনাম উচ্চশিক্ষার সংকোচন – বিতর্কের গভীরে এক অনুসন্ধান

Dhaka Central University: The Core Debate Over Seven Colleges' New Structure and Future

0 13

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয়টি হলো ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (DCU) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। প্রায় দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর ভার বহন করা সাত কলেজকে নিয়ে এই নতুন কাঠামোর পরিকল্পনা যখন সামনে আসে, তখন একদিকে যেমন আশার সঞ্চার হয়, তেমনি অন্যদিকে জন্ম নেয় গভীর উদ্বেগ ও আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্তি পরিবর্তনের দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার পর সাত কলেজের এই নতুন রূপান্তর কি সত্যিই উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের পথ প্রশস্ত করবে, নাকি এটি কেবলই পুরোনো সংকটকে নতুন মোড়কে হাজির করবে?

প্রথম থেকেই ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে শিক্ষক ক্যাডারদের পদ বিলুপ্তির ঝুঁকি, ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর স্বতন্ত্র কাঠামো হারানোর ভয় এবং সবচেয়ে বড় কথা, উচ্চমাধ্যমিক (HSC) স্তরের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা। এই নিবন্ধে আমরা DCU-এর প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের গভীরে যাব, এর কাঠামো বিশ্লেষণ করব এবং এই বহুমুখী সংকটের একটি যৌক্তিক ও মধ্যস্থতাকারী সমাধান খোঁজার চেষ্টা করব।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (DCU) অধ্যাদেশ: কী আছে নতুন কাঠামোতে?

প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (Dhaka Central University) গঠনের উদ্দেশ্য হলো সাত কলেজকে একটি একক ও স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামোর আওতায় এনে শিক্ষার মান, পরীক্ষা পরিচালনা এবং সেশন জট নিরসন করা। নতুন অধ্যাদেশে বেশ কিছু আমূল পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা কলেজগুলোর পরিচালন পদ্ধতিকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে।

হাইব্রিড পদ্ধতিতে ক্লাস ও পরীক্ষার নিয়ম (DCU হাইব্রিড শিক্ষা পদ্ধতি)

DCU-এর অন্যতম প্রধান প্রস্তাবনা হলো হাইব্রিড শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা। এই পদ্ধতিতে, শিক্ষার্থীরা আংশিকভাবে ক্যাম্পাসে এবং আংশিকভাবে অনলাইনে ক্লাস করবে। এই মডেলটি মূলত আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো অনুসরণ করে তৈরি, কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে সাত কলেজের মতো বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী এবং সীমিত প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে এই পদ্ধতি কতটা সফল হবে?

ক্যাম্পাসে ডিসিপ্লিনভিত্তিক বিভাজন: কোন কলেজে কী পড়ানো হবে?

নতুন কাঠামোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হলো সাত কলেজকে তাদের ঐতিহ্যবাহী বহুমাত্রিক শিক্ষা থেকে বের করে এনে ডিসিপ্লিনভিত্তিক স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এর অর্থ হলো, প্রতিটি কলেজ কেবল নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে (যেমন বিজ্ঞান, কলা, বাণিজ্য) শিক্ষাদান করবে। এটি কলেজগুলোর ঐতিহ্যগত পরিচয়ের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

DCU-এর অধীনে সাত কলেজের প্রস্তাবিত বিভাগসমূহ (স্কুলভিত্তিক):

  • স্কুল অব সায়েন্স (School of Science): (উদাহরণস্বরূপ) ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজে গণিত, ফলিত গণিত, প্রাণিবিদ্যা, রসায়ন ইত্যাদি কেন্দ্রীভূত হবে।
  • স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ (School of Arts & Humanities): (উদাহরণস্বরূপ) কবি নজরুল ও তিতুমীর কলেজে বাংলা, ইতিহাস, দর্শন, ইংরেজি ইত্যাদি কেন্দ্রীভূত হবে।
  • স্কুল অব কমার্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (School of Commerce & Management): (উদাহরণস্বরূপ) বাঙলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা কলেজে হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ফিন্যান্স ইত্যাদি কেন্দ্রীভূত হবে।
  • স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস (School of Social Sciences): (উদাহরণস্বরূপ) সাত কলেজের মধ্যে একটিতে সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি কেন্দ্রীভূত করা হবে।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কেন ক্লাস?

অধ্যাদেশে ক্লাসের সময় নিয়েও বিতর্কিত প্রস্তাব রয়েছে। প্রাথমিকভাবে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্লাসগুলো দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মূল কারণ, কলেজ ক্যাম্পাসগুলোর ভবন বা অবকাঠামো সম্পূর্ণরূপে DCU-এর অধীনে এলেও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ক্লাসগুলো সকালে চলার কারণে সংস্থানগত সংকট এড়ানো। তবে, এই অদ্ভুত সময়সূচি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ: ‘নতুন বিশ্ববিদ্যালয় মানেই উচ্চশিক্ষার সংকোচন’?

DCU প্রতিষ্ঠা নিয়ে যে আন্দোলন ও বিতর্ক চলছে, তার প্রধান কারণ হলো অংশীজনদের মধ্যে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা ও গভীর উদ্বেগ। এই উদ্বেগগুলি কেবল প্রশাসনিক নয়, বরং শিক্ষকতা পেশার ভবিষ্যৎ ও দেশের শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোগত স্থিতিশীলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পদ বিলুপ্তির ঝুঁকি কেন দেখছেন শিক্ষকেরা?

সাত কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকই বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য এবং তারা সরকারি কর্মচারী। ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি যদি পুরোপুরি স্বতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে এই শিক্ষকেরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন। এর ফলে, তাদের বর্তমান ক্যাডার পদ, পদোন্নতির সুযোগ এবং চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।

অধিভুক্তি পরিবর্তনের ক্ষণিকের ফল

অধিভুক্তি পরিবর্তনের ক্ষণিকের ফল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তিতে সাত কলেজের ফলাফল বিপর্যয় এবং সেশন জট—যা প্রমাণ করে প্রস্তুতি ছাড়া পরিবর্তন কত ভয়াবহ হতে পারে। ২০১৪ সালে যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তি স্থানান্তরিত হয়, তখন অনিয়মিত পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের দীর্ঘসূত্রিতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি করেছিল। এই ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, প্রশাসনিক প্রস্তুতি ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্টতা ছাড়া যেকোনো বড় পরিবর্তন হিতে বিপরীত হতে পারে।

এই অনিশ্চয়তা দূর করতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার শিক্ষকেরা তাদের স্বতন্ত্র পদ ও মর্যাদা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছেন।

উচ্চমাধ্যমিক (HSC) স্তর বিলুপ্তির আশঙ্কা: ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সাত কলেজের ঐতিহ্য শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। বিশেষ করে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে উচ্চমাধ্যমিক (HSC) স্তরের হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। DCU প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যদি কলেজগুলো শুধু উচ্চশিক্ষা স্তরের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, তবে উচ্চমাধ্যমিক স্তর বিলুপ্ত হবে—এই আশঙ্কা থেকেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন।

ঐতিহ্য ও স্বতন্ত্র কাঠামো হারানোর ভয়: ইডেন-ঢাকা কলেজের বিশেষ উদ্বেগ

ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ—প্রতিটি কলেজেরই নিজস্ব একটি ঐতিহ্য ও বিশেষত্ব রয়েছে। ডিসিপ্লিনভিত্তিক স্কুল গঠনের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বতন্ত্র নাম, পরিচিতি ও শিক্ষা কাঠামো হারানোর ভয় তৈরি হয়েছে। ছাত্র সংগঠন ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজের ঐতিহ্য ধরে রাখার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন।

DCU কাঠামো নিয়ে মূল আপত্তি কোথায়? (তুলনামূলক বিশ্লেষণ)

DCU-এর ধারণাটি উচ্চশিক্ষার আধুনিকায়নের ইঙ্গিত দিলেও, এর বাস্তবায়ন এবং প্রস্তাবিত কাঠামোর দুর্বলতা নিয়েই প্রধান আপত্তি।

প্রস্তাবিত কাঠামো বনাম শিক্ষকদের ‘পৃথক ক্যাম্পাস’ দাবি

দিক প্রস্তাবিত DCU কাঠামো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি
শিক্ষক পদ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (বিসিএস ক্যাডার পদ বিলুপ্তি) স্বতন্ত্র বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার পদ ও মর্যাদা বজায় রাখা
ক্যাম্পাস ডিসিপ্লিনভিত্তিক স্কুল হিসেবে পরিচিতি (কলেজের নাম গৌণ) ঐতিহ্যবাহী কলেজের নাম, স্বতন্ত্র পরিচয় ও স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা
শিক্ষা স্তর কেবল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উচ্চমাধ্যমিক স্তর (HSC) বহাল রাখা
ক্লাসের সময় দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা দিনের বেলায় স্বাভাবিক ক্লাস রুটিন

পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই অধিভুক্তি বাতিল ও নতুন জটিলতা (ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট)

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা সংকট হলো অপরিকল্পিত প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। বারবার অধিভুক্তি পরিবর্তন (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় → ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় → এখন DCU) সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদী অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। অধিভুক্তি পরিবর্তনের এই অস্থিরতা প্রমাণ করে যে, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা না করে তড়িঘড়ি কোনো পরিবর্তন কেবল নতুন জটিলতা সৃষ্টি করে। [[বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা সংকট]] বা “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধিভুক্তি পরিবর্তন” অংশে অ্যাঙ্কর করা হবে।

সাত কলেজের সংকটের মূল স্টেকহোল্ডার (Stakeholder) ও তাদের উদ্বেগ

সাত কলেজের এই সমস্যাটি কেবল প্রশাসনিক নয়, এটি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ ও উদ্বেগের একটি জটিল মিশ্রণ।

  • শিক্ষার্থী: তারা চান দ্রুত সেশন জট নিরসন, মানসম্মত শিক্ষাদান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, তাদের সার্টিফিকেটের একটি গ্রহণযোগ্য মান।
  • শিক্ষক: তাদের প্রধান উদ্বেগ হলো চাকরির নিরাপত্তা, পদোন্নতি এবং বিসিএস ক্যাডার হিসেবে তাদের ঐতিহ্য রক্ষা। তারা চান একটি এমন কাঠামো, যেখানে তাদের বর্তমান সুবিধাগুলো অক্ষুণ্ন থাকবে।
  • সরকার/মন্ত্রণালয়: তারা মূলত শিক্ষা ব্যবস্থাপনার উন্নতি, পরীক্ষা পদ্ধতির শৃঙ্খলা আনয়ন এবং সেশন জট নিরসনের মাধ্যমে জাতীয়ভাবে উচ্চশিক্ষার সংকট কাটানোর চেষ্টা করছে।

সমাধান ও ভবিষ্যৎ পথ: ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির জন্য বিকল্প কাঠামো কী হতে পারে?

DCU-এর উদ্যোগ ব্যর্থ হোক তা কেউ চায় না। বরং, বিতর্ক এড়িয়ে একটি কার্যকর সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

মাল্টি-ক্যাম্পাস মডেল: স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার কৌশল

 

বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ

প্রো-টিপ: স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস বনাম পাঠকেন্দ্র – সমাধান হতে পারে ‘মাল্টি-ক্যাম্পাস ইউনিভার্সিটি’ (যেমন University of London-এর কিছু কাঠামো), যেখানে কলেজগুলোর স্বায়ত্তশাসন বজায় থাকবে। এই মডেলে, DCU হবে একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ও প্রশাসনিক সংস্থা, আর সাত কলেজ হবে তার অন্তর্ভুক্ত স্বতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসিত “কনস্টিটুয়েন্ট কলেজ”। শিক্ষকেরা তাদের বিসিএস ক্যাডার মর্যাদা ধরে রাখতে পারবেন এবং কলেজগুলো তাদের ঐতিহ্য রক্ষা করতে পারবে।

এই মাল্টি-ক্যাম্পাস মডেল কার্যকর হলে, ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি একটি প্রশাসনিক ছাতা হিসেবে কাজ করবে, যেখানে সাত কলেজ স্বতন্ত্র ক্যাম্পাস হিসেবে তাদের নিজস্ব একাডেমিক কর্মসূচি পরিচালনা করবে, কিন্তু পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেট প্রদান হবে কেন্দ্রীয়ভাবে।

অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থার জটিলতা কাটিয়ে ওঠার উপায়

নতুন কাঠামো বাস্তবায়নের আগে একটি শক্তিশালী অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা চালু করা আবশ্যক। এই সময়ে, নতুন অধ্যাদেশের প্রতিটি ধারা নিয়ে শিক্ষক সমিতি, ছাত্র প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে একটি সর্বসম্মত রূপরেখা তৈরি করতে হবে। বিশেষত, উচ্চমাধ্যমিক স্তর ও বিসিএস ক্যাডার শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি।

উপসংহার: ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির যাত্রা কি মসৃণ হবে?

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি একটি নতুন উচ্চশিক্ষার যুগের সূচনা করার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে, কিন্তু এর যাত্রাপথ যে মোটেও মসৃণ হবে না, তা স্পষ্ট। একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন সফল করতে গেলে শুধুমাত্র প্রশাসনিক নির্দেশনাই যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ, বিশেষত সাত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পূর্ণ সমর্থন ও অংশগ্রহণ।

যদি সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাল্টি-ক্যাম্পাস মডেলের মতো একটি মধ্যস্থতাকারী কাঠামো গ্রহণ করে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রধান উদ্বেগগুলো দূর করার জন্য ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ও লিখিত আশ্বাস প্রদান করে, তবেই DCU কাঠামোটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হতে পারে। অন্যথায়, এই উদ্যোগ কেবল পুরোনো জট দূর না করে নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে, যা চূড়ান্তভাবে দেশের উচ্চশিক্ষার মানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

সাত কলেজের মোট দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী (শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে), যা দেশের যেকোনো একক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কয়েক গুণ বড়। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য দ্রুত সুচিন্তিত পদক্ষেপ জরুরি। তাদের ভবিষ্যৎ কোনো তড়িঘড়ি করা সিদ্ধান্তের বলি হতে পারে না।

আরও পড়ুনঢাকা ওয়াসা নিয়োগ: ৮৩টি পদে আবেদন শুরু, বিস্তারিত জানুন

Source প্রথম আলো

Leave A Reply

Your email address will not be published.